সায়ান বসাক : কে জানতো বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচ যাদের কাছে পরাস্ত হয়েছিল। সেই দুই দলকেই নটআউটে হারিয়ে বিশ্বসেরা হবে তাঁরা। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। যাদের কাছে লিগ পর্যায়ে হেরে লড়াই করতে হচ্ছিল একসময় শেষ চারে আসার জন্য। সেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেমিফাইনাল ও ভারতকে ফাইনালে হারিয়ে মাঠের বদলা মাঠেই নিল অস্ট্রেলিয়া।
বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশ্ব কাপযুদ্ধ! মুখোমুখি সেই ভারত অস্ট্রেলিয়া। সেই ২০ বছর আগে জোহেনসবার্গের ফাইনালের স্মৃতি উস্কে ওঠা। দুই ফাইনালিস্ট ঘোষিত হয়ে যাওয়ার পরই চর্চা ছিল তুঙ্গে।
রবিবার আহমেদাবাদে টস ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনে করাই হচ্ছিল যে অধিনায়ক টস জিতবে সে আগে ব্যাটই নেবে। তবে অস্ট্রেলিয়া টস জিতে বোলিং বেছে নেয়। রোহিত শর্মার তাতে কোনো সমস্যাই ছিলনা। সাদরে গ্রহন করে খেলতে নামেন। তবে ওপেনিং জুটি ভাঙে ৩০ রানে। গিলের আউটের পর রোহিতের তালও কেটে যায়। ব্যাটে ঝড় তোলার চেষ্টা করলেও উইকেট ধরে রাখতে পারলেন না। ৪৭ রানের ইনিংসে ছিল চারটি চার ও তিনটি ছক্কা। হয়তো একটু জলদি করে ফেলেছিলেন। তবে প্রশংসার যোগ্য ট্রেভিস হেডের কভার পয়েন্ট থেকে পিছনে দৌড়ে ক্যাচ। প্রথম পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর অজিদের মধ্যে যেন বাড়তি অক্সিজেন এসে যায়। প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত কেন তাঁরা নিয়েছে সেটা বুঝিয়ে দেয় তাদের বোলিং আক্রমণে। একের পর এক উইকেট পতন ঘটতে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডিংয় নিয়ে কোনো কথা হবে না। ফাইনালে একেবারে
বলকে পাখির চোখ করে ফেলেন তারা। ভারতীয় ব্যাটিং ইনিংসে বিরাট কোহলি যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন তাও আশার আলোটি জ্বলছিল। কামিন্সের শিকার হলেন তিনি। কেএল রাহুল চেষ্টা করছিলেন স্কোরবোর্ডে রান তোলার। তবে স্টার্কের শিকার হয়ে ফিরতে হয়।
ফাইনালে যেন এক অচেনা ভারত। পুরো বিশ্বকাপ জুড়ে যে প্রদর্শন দেখালো তাঁরা সেটা যেন কোথায় হারিয়ে গেল এদিন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চুরমার হয়ে গেল ভারতীয় দল। ২৪০ রানেই থামতে হলো তাদের। সেই রান ডিফেন্ড করতে নেমে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে ভারতীয় দল। সাত ওভারের মধ্যে অজিদের তিনটি উইকেট ফেলে দেয় তাঁরা।জয়ের সম্ভাবনা ভারতের দিকে কিছুটা এগিয়েছিল। তবে সেইটুকু সম্ভাবনা ছিনিয়ে নিয়ে আসে ট্রেভিস হেড ও মারনশ লাবুশন। দুজনের ১৯২ রানের জুটি আরও এক বিশ্বকাপ এনে দিল দেশকে। এ নিয়ে ষষ্ঠ বিশ্বকাপ খেতাব জিতল অস্ট্রেলিয়া। ১৯৮৭, ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭, ২০১৫র পর এবার ২০২৩। ভারতের মাটিতে ভারতকে ফাইনালে হারিয়ে বিশ্বকাপ ছিনিয়ে গেল ক্যাঙ্গারু বাহিনী।