শিলা রাজবংশী : গত বুধবার ৫৮ বছর মাঝ বয়সি রাজেন্দ্র মাহাতো নামে এক শিক্ষক মারা যান । যিনি কিনা বিহারের মধুবনী জেলায় বলরামপুরের বাসিন্দা ছিলেন।
শিক্ষকতার সূত্রে দীর্ঘদিন মুর্শিদাবাদে সামশেরগঞ্জের কোহতপুরে থাকতেন তিনি ।
মৃত ব্যক্তির স্ত্রী গত বৃহস্পতিবার মৃতদেহ সৎকার করতে নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা হয়ে দাঁড়ায় এক মধ্যবয়স্ক মহিলা ।
দাবি জানান তিনিই মৃত শিক্ষকের প্রকৃত স্ত্রী । এরপর আরো একজন এসে মৃত শিক্ষকের স্ত্রী হিসেবে দাবী করে ।
সূত্রের খবর অনুযায়ী : রাজেন্দ্র মাহাতো মুর্শিদাবাদের চাকরি করতে আসার আগেই পাশের গ্রামের সংগীতা মাহাতোকে বিয়ে করেছিলেন। তার দুটি সন্তানও রয়েছে। দুজনের মধ্যে বনিবনা না হওয়ার ফলে তাদের মধ্যে দূরত্বের সৃষ্টি হয়। পরে মুর্শিদাবাদের চাকরি পাওয়ার পর সেখানে থাকতে শুরু করেন । সেখানে আলাপ হয় ডলি নামের এক মহিলার সাথে । সেখানেও তার দুটি সন্তান রয়েছে ।
এরপর ডলির সাথে তার সম্পর্ক বেশিদিন সুদীর্ঘ হয়নি। যার ফলস্বরূপ আদালতের দ্বারস্থ পর্যন্ত হতে হয় দুজনকে । সেখানে ডলি খোরপোশের দাবি জানায় । যে মামলা এখনও পর্যন্ত জঙ্গিপুর আদালতে বিচারাধীন ।
এতকিছুর পর তিনি সবকিছু ছেড়ে শমসেরগঞ্জের রতনপুর স্টেশন পল্লী এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করে এবং সেইখানে সন্ধ্যা সাহা নামে এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের জোড়ায়। এবং তাকে বিয়ে করেন। সন্ধ্যা সাহা তার তৃতীয়তম স্ত্রী ।
তিন স্ত্রীর মধ্যে এখন চলছে স্বামীর দেহ নিয়ে চুলোচুলি । কে স্বামী সম্পত্তির ভাগ পাবে তাই নিয়ে চলছে বাক বিতন্ডা।
মৃত রাজেন্দ্র মাহাতো বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ থাকার পর গত বুধবার মারা গেলে তার স্ত্রী সন্ধ্যা সাহা গত বৃহস্পতিবার সৎকারের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন । তখন বাধা হয়ে দাঁড়ায় মৃত ব্যক্তির দ্বিতীয় স্ত্রী ডলি মাহাতো । খবর পেয়ে হাজির হন তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী সঙ্গীতা মাহাতো ।
প্রথম স্ত্রী সঙ্গীতা মাহাতোর দাবি , তাকে বিয়ে করে শিক্ষকতার কাজে তার মৃত স্বামী মুর্শিদাবাদের চলে আসেন । তিনি তার শ্বশুরবাড়ি সকলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছেন । তিনি এও জানেন তার স্বামী এখানে এসে এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান কিন্তু বিয়ের সমন্ধে তিনি কিছুই জানেন না ।
এদিকে ডলিও জানান তিনিও জানতেন তার মৃত স্বামীর প্রথম পক্ষে স্ত্রীর কথা। কিন্তু তার সাথে বিচ্ছেদ হওয়ার পর তার মৃত স্বামী যে আবার বিয়ে করেছেন তা তিনি জানেন না এবং এই বিয়ে তিনি অস্বীকার করেন । এবং তার দাবি সম্পতির ভাগ শুধু প্রথম বা দ্বিতীয় পক্ষ পাবে। তৃতীয় পক্ষের কোনো অধিকার নেই ।
অন্যদিকে তৃতীয় স্ত্রী সন্ধ্যা সাহা জানান , তার স্বামী মৃত রাজেন্দ্র নেতা মারা যাওয়ার আগে তার সমস্ত সম্পত্তি তার নামে লিখে দিয়ে গেছেন ।
এরূপ চুলোচুলি রাশ টানতে পুলিশ হস্তক্ষেপ করেন । পুলিশ মৃত শিক্ষকের দেহ তুলে দেন তার মায়ের হাতে । শেষকৃত্য হতে না হতেই আবার সম্পত্তির অধিকার নিয়ে বচসা শুরু হয় । মৃত ছেলের ৩ স্ত্রীর এরূপ কুৎসিচত আচরন দেখে তার মা খুবই হতাশ হন । এবং বলেন এরা কেউই তারা ছেলের স্ত্রী হওয়ার যোগ্য নয় । তার ছেলের জন্য কারো কোনো শোক প্রকাশ নেই । সম্পত্তির লড়াইয়ে ব্যস্ত তারা ।
কে পাবে চাকরী ? কে পাবে সব সম্পতি? এই নিয়ে বিশ্রী জটিলতা চলছে ।
ঘটনাটি ঘটে এর শমশেরগঞ্জ এর রতন পুর স্টেশন এলাকায় । এ এক অদ্ভুত দৃশ্যের সাক্ষী হলো মুর্শিদাবাসী ।