শিলা রাজবংশী : কি শুনে চমকে গেলেন ? আরো চমকে যাবেন এই ব্যক্তির সম্পত্তির পরিমাণ শুনলে ।
সাধারণত আমরা জানি দেওয়ালে পিট না থাকলে মানুষ ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নেয় না । কিন্তু এই সমাজে এখন ভিক্ষা একটি পেশা । ভিক্ষা করেই মাসে রোজগার করছেন ৬০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা ।
এমনই এক ভিখারির কথা আজ আপনাদের আমরা জানাবো ।
তার নাম ভরত জৈন। পেশায় তিনি ভিখারি । তিনি ভিক্ষা করেই মাসে রোজগার করেন ৬০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা । তার মুম্বাইতে রয়েছে নিজস্ব দেড় কোটি টাকার একটি দু কামরার ফ্ল্যাট । তা ভাড়া দিয়ে সেখান থেকে তিনি প্রতি মাসে লভ্যাংশ পান ৩০ হাজার টাকা । ছেলেমেয়েদের পড়ান দামি স্কুলে । বর্তমানে তিনি ভিক্ষাবৃত্তির পাশাপাশি রিয়ালে এস্টেটে টাকা নিয়োগ করছেন । এবং থানেতে তার দুটি দোকান আছে ।
বিশ্বের ধনী ভিখারিদের প্রথম স্থানে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন তিনি । তার সম্পত্তির মোট পরিমাণ ৭.৫ কোটি টাকা বা এক মিলিয়ন ডলার ।
যেখানে ঝুড়ি ঝুড়ি ডিগ্রি নিয়ে চাকরি মিলছে না মিললেও যা বেতন তাতে ভরত জৈনকে টক্কর দেওয়া সম্ভব না । মধ্যবয়সী ভরত জৈন মুম্বাইয়ের রাস্তায় ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস বা আজাদ ময়দানে ভিক্ষে করে যা রোজগার করছেন তা নজির করেছে বলতেই হয় ।
শুধু যে ভরত জৈন ভিক্ষা করে কোটিপতি হয়েছেন তা নয় । ভরত জৈনের মত আরও এরকম অনেক ভিখারী আছে । যাদের সম্পটির পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে ।
১. সভরতিয়া দেবী যার মাসিক রোজগার পঞ্চাশ হাজার টাকারও বেশি । তার রয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার সম্পত্তি । প্রতিবছর ৩৬ হাজার টাকার বিমার কিস্তিও জমা দেন তিনি । এবং পাটনাতে নিজস্ব একটি বাড়িও রয়েছে ।
২. কৃষ্ণ কুমার গীতে এর দৈনিক আয় প্রায় দেড় হাজার টাকা । এছাড়াও এনার রয়েছে মুম্বাইয়ের নালাসোপাড়ায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট ।
৩. সম্ভ্রাজি কালে সম্ভাজি কালের দৈনিক আয় হাজার টাকারও বেশি । সোলাপুরে ইনার রয়েছে দুটি বাড়ি এবং কাটা খানেক জমি । ভিরারে একটি ফ্ল্যাটও তার নামে ।
৪. লক্ষ্মী দাস লক্ষ্মী দাস কলকাতায় ১৯৬৪ সালে ১৬ বছর বয়সে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেছিলেন । প্রতিদিন সামান্য করে সঞ্চয় করে রাখতেন তিনি । তিল তিল করে ৫০ বছর জমানো পয়সার মধ্যে ছিল ১৯৬১ সালের এক পয়সার কয়েন থেকে এক টাকা সবই ।
৫. প্পাপু কুমার ইনি বাকিদের থেকে একটু আলাদা । শিক্ষিত ছেলে । দুর্ঘটনার কবলে পড়ে নিজের দুটি পা হারান । এর পর থেকে তিনি ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন । এর সম্পত্তির পরিমাণ দেড় কোটি টাকারও বেশি । ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে তার নামে। স্থানীয় বাসিন্দাদের চড়া সুদে 10 লক্ষ টাকার আর ঋণও দিয়েছেন তিনি ।
৬. মাসুম মাসুম দিনে এক থেকে দেড় হাজার টাকা ভিক্ষে করে উপার্জন করে । পশ্চিম ও পূর্ব অন্ধেরিতে একটি করে এক কামরা ফ্ল্যাট রয়েছে তার নামে ।
এরকম হাজারো ভিখারী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন আপনার আমার চারপাশে ।
এরা সকলেই ভরত জয়েন এর কাছে কিছুই না ।
সমীক্ষা অনুযায়ী যে রাজ্যগুলির ভিখারীর সংখ্যা বেশি তাদের মধ্যে এগিয়ে পশ্চিমবঙ্গ । আমরা কয়েকটি রাজ্যকে পর্যায়ক্রমে সাজায় তাহলে দেখতে পাবো -
১. পশ্চিমবঙ্গে ভিখারি সংখ্যা ৮১ হাজার ২২৪ জন ।
২. উত্তর প্রদেশে ভিখারি সংখ্যা ৬৫ হাজার ৮৩৫ জন ।
৩. অন্ধ্রপ্রদেশে মোট ভিখারি সংখ্যা ৩০ হাজার ২১৮ জন ।
৪. বিহারে ভিখারির সংখ্যা ২৯ হাজার ২৭৩ জন ।
৫. মধ্যপ্রদেশে ভিখারি সংখ্যা ২৮ হাজার ৬৯৫ জন ।
দিনকে দিন বাড়ছে ভিখারির পরিমাণ লকডাউনের পর থেকে ভিখারির সংখ্যাটা যেন মাত্রাদিক বেড়ে চলেছে । ভিক্ষাবৃত্তির দিক থেকে এগিয়ে আছে বাংলা । বর্তমানে অসহায় ভিখারিদের সাথে মিশে গেছেন অভিনেতা ভিখারিদের সংখ্যা ।
কি ভাবছেন অভিনেতা ভিখারী ? এ আবার কি ? কেন বলছি একথা তাহলে শুনুন
সূত্রের খবর অনুযায়ী : ভিক্ষা একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে । কোলে সন্তান নিয়ে ভিক্ষায় মেলে ২০০ টাকা । শিশুদের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করে ভিক্ষে করলে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা । রুগ্ন শীর্ণকায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের রেট আরো বেশি । এভাবেই তারা মাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা রোজগার করছেন । আর কেন চাকরির জন্য বা কাজের জন্য হত্তে দিয়ে পড়ে থাকবেন । দিব্যিতো চলে যাচ্ছে ভিক্ষে করে ।
সমাজের নিম্ন শ্রেণীর জন্য সরকার করেছেন বিভিন্ন প্রকল্প যার মধ্যে বিনামূল্যের চাল সরকারি আবাসস্থল এছাড়াও মাসিক ভাতা রয়েছে ।
এর পড়ও কেন এত ভিক্ষাবৃত্তি বেড়ে চলছে ? প্রশ্ন আমার আপনার সবার ।
বর্তমানে চাকরি নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি । রাজ্যে নেই শিল্প । করোনার পরে জীবিকা হারিয়েছে বহু মানুষ ।
বিশেষজ্ঞদের দাবি সরকারি প্রকল্প গুলোর দিকে সমাজের নিচু তলার মানুষদেরকে এগিয়ে আনলে তারা ভিক্ষাবৃত্তির থেকে বেরিয়ে আসবে ।
প্রতিবছর দেশে প্রায় 40 হাজারের বেশি শিশু অপহৃত হচ্ছে । তার মধ্যে একাংশ পরছে নেশার কপালে এবং বাকিদের ব্যবহার করা হচ্ছে ভিক্ষা ব্যবসায়ী ।
শুধু যে দুস্থ পরিবার ভিক্ষাবৃত্তির সাথে যুক্ত তা নয় দেশের মোট ভিক্ষুকদের মধ্যে ২১ শতাংশ দ্বাদশ শ্রেণী উত্তীর্ণ । এবং ৩০০০ ভিক্ষুক যারা ডিগ্রিধারী ।
সমাজ কোন তলানিতে ঠেকলে এমন রূপ নেয় তা আমার আপনার বুঝতে বাকি নেই । এর জন্য
দায়ী কারা ?
প্রশ্ন এবার নিজেকে করুন । সময় এসেছে প্রশ্ন করার।
একের পর এক ভিক্ষুকের সংখ্যা বাড়তে থাকলে উন্নয়ন তো দূরের কথা । পরে অন্য দেশের কাছেই না হাত পাততে হয় আমাদের । তাই এখন থেকেই সাবধান হয়ে যান ।
কাকে ভিক্ষা দিচ্ছেন তাও একবার দেখে নিন । তার সম্পত্তির কাছে আপনি নন তো ভিখারি ?