এখানেই দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরীর বাকি কাজ সম্পন্ন হবে মহাপূজার জন্য। শোভাবাজার রাজবাড়িতে দূর্গা প্রতিমা তৈরীর কাজ বিভিন্ন পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়। প্রথমে পাঠশালায় দেবীর কাঠামো করা, খড় বাঁধা এবং একমেটের কাজ সম্পন্ন হয়। এরপর শুক্লা ত্রয়োদশীর সকালে মাকে পাঠশালা থেকে ঠাকুরদালানে তোলা হয়। মূর্তি তৈরিতে সমস্ত কাজ , যেমন দো মেটে, রং করা, মা কে সাজানোর কাজ সম্পন্ন হয় ঠাকুরদালানেই।
চিত্র সৌজন্যে - শোভাবাজার রাজবাড়ি |
রীতি মেনে রথযাত্রার দিন দেবীর কাঠামো পূজা হয়। মহালয়ার বিশেষ তিথিতে হয় চক্ষুদান । কৃষ্ণপক্ষের নবম তিথিতে বোধন হয় , সেই দিন থেকে ষষ্ঠী পর্যন্ত চন্ডীপাঠ হয় শোভাবাজার রাজবাড়ির পূজোতে।
ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত মা দূর্গা কে বৈষ্ণবী রূপে পূজা করা হয়। ২৬৬ বছরের প্রাচীন শোভাবাজার রাজবাড়ির পূজোর ইতিহাস, নিয়মকানুন, রীতিনীতি নিয়ে মানুষের অনেক আবেগ উৎসুক জড়িয়ে আছে। ইতিহাস বলছে, ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের জয়লাভের পর, রাজা নবকৃষ্ণ, সিরাজের পরাজয়ের আনন্দে শোভাবাজারে দুর্গাপূজো শুরু করেন। শোনা যায় ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব স্বয়ং এই বাড়িতে পূজোর সময় একবার উপস্থিত হয়েছিলেন। কালের নিয়মে বহু যুগ কেটে গেছে, এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্ম পালাবদল হয়েছে ,হাত বদল হয়েছে পুজোর। কিন্তু পুজোর মাহাত্ম্য, আভিজাত্য ও সূক্ষ্ম বাধবিচার আজও রয়েছে শোভাবাজার রাজবাড়িতে।