নিজেদের প্রকৃত সম্মানের লড়াইয়ে এবার শহরের যৌনকর্মীরা । দুর্গাপুরাণ মতে মাতৃ মূর্তি প্রস্তুত করতে যে বিশেষ উপাদানগুলি প্রয়োজন হয় তারমধ্যে যৌনপল্লীর মাটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। শাস্ত্রমতে যৌনপল্লী হলো পাপ ও পুণ্যের বিভাজন রেখা , যেখানে মানবজীবনের কামনা , বাসনা , লালসাকে নিজ অঙ্গে ধারন করেন যৌনকর্মীরা। কিন্তু এইবার মূর্তি প্রস্তুতে মাটি দিতে নারাজ তারা, কার্যত সেই কারনে প্রায় বন্ধের মুখে শতাব্দী প্রাচীন এই রীতি। শহরের ১২ টি নিষিদ্ধপল্লীর সমন্বয় গঠিত 'দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি ' র মতে তাদের সম্মান শুধু পূজার ৪ দিন সীমাবদ্ধ কেনো? কেনো বছরের ৩৬৫ দিন সম্মান পান না তারা?
২৬৬ বছর আগে রাজা নবকৃষ্ণ দেব শোভাবাজার রাজবাড়িতে শুরু করেন এই শহরের প্রথম দুর্গাপুজা। সেই সময় থেকেই যৌনকর্মীদের সামাজিক স্বীকৃতি দানের উদ্দেশেই মূলত চালু হয় এই প্রথা । কিন্তু এইবার তারা চান না কোনো সাময়িক সম্মানের দান , তাদের স্থায়ী সম্মানের অধিকারেই এই লড়াই। সেই লড়াইয়ের চিত্র স্পষ্ট ' দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি ' র এইবছর পূজার থিম এও।
তাদের এইবারের পূজার থিম ' আমাদের পুজো আমরাই মুখ '। তাদের মতে পুজোতে লাগে নিষিদ্ধ পল্লীর মাটি অথচ পুজোর চারদিন সাধারন মানুষের মতো আনন্দ করার অধিকার নেই তাদের। এমন বৈষম্য কেনো? তাই দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি ' র উদ্যোগ যাতে এই পুজোয় সমস্ত যৌনকর্মীরা
ও তাদের সন্তানরা সাধারন ভাবে আনন্দ ও উপভোগ করে কাটাতে পারে।