কুমারটুলি নামটা শুনলেই প্রথমে মনে আসে ভেজা মাটির গন্ধ , কাঠের শব্দ আর বাঁশের কাঠামো সাথে উৎসবের সুর। সেই কুমারটুলির বয়স আজ প্রায় ২৫০ পেরিয়েছে ।তবে প্রায় ২৫০ বছরেরও বেশি আগের সেই কুমারটুলির পরিধি ছিল আরো অনেক বিস্তৃত। শোনা যায় রাজা নবকৃষ্ণ দেব যখন কলকাতায় প্রথম দুর্গাপুজা করার উদ্যোগ নেন সেই সময় এ শহরে পরিকাঠামোর ছিল বড় অভাব ,তার অনুরোধেই মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র, কৃষ্ণনগর থেকে পাঠান প্রতিমা শিল্পী। শোনা যায় কুমারটুলি অঞ্চলে সর্ব প্রথম বসবাস শুরু করেন শিল্পী মধুপাল ও তার পরিবার। কুমারটুলি অঞ্চলে আজও তার নামাঙ্কিত একটি রাস্তা আছে। তবে রাজা নবকৃষ্ণ দেবের উদ্যোগ ও শিল্পী মধুপালের আগমন সূচনা করে এক নতুন দিগন্তের।
ধীরে ধীরে কলকাতার বহু বনেদি পরিবার উদ্যোগ নেয় দুর্গা , কালি সরস্বতী সহ অন্যান্য পূজার এবং তার জন্য ডাক পড়তে থেকে নবদ্বীপ ও শান্তিপুরের শিল্পীদের । প্রথমে তারা এসে কাজ সম্পূর্ণ করে ফিরে যেতেন , তবে পরবর্তী কালে নিজেদের কাজের সুবিধার্থে তারা হয়ে যান এই অঞ্চলের স্থায়ী বাসিন্দা ।বর্তমানে কুমারটুলিতে প্রতিমা শিল্পীর সংখ্যা প্রায় ২০০ র কাছাকাছি। প্রতিমার সাজও তৈরি হয় এখানেই , সেই সাজ তৈরির কাজে বর্তমানে নিয়োজিত প্রায় ৫০ জন সাজ শিল্পী । এ ছাড়া ও আছেন ১৫০ সহকারী মৃৎশিল্পী। পুজোর আগেই কাটোয়া , বনগাঁ ও নৈহাটি সহ বিভন্ন স্থান থেকে আসেন ঠাকুরের বাহক। তবে আজ শুধু পটুয়ারা নন প্রতিমা তৈরি করেন আর্ট কলেজের ছাত্র - ছাত্রীরাও। পূজা বেড়েছে শহরে , সেই সাথে বেড়েছে দেশের বাইরেও প্রতিমার চাহিদা তাই স্থান সংকুলান কমেছে কুমারটুলিতে।তবে এই স্থানের ঐতিহ্য ও মাহাত্ম্য অসীম , তাই শুধু ভারত নয় প্রায় শতাধিক প্রতিমা প্রতি বছর পাড়ি দেয় বিদেশে ও।