কয়েক দশক আগেও উত্তর কলকাতার পূজো বলতে আমরা বুঝতাম সাবেকি পুজো। উত্তর কলকাতার দুর্গাপূজা মানেই পুরানো অভিজাত্য , ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সংমিশ্রনে অনন্য। কিন্তু সময়ের সাথে সমাজ যত আধুনিক হয়েছে , আভিজাত্যেও অভিনবত্বের ছোঁয়া লেগেছে। উত্তর কলকাতার পূজো গুলির মধ্যে অন্যতম হলো হাতিবাগান নবীন পল্লীর পূজো। সাবেকিয়ানা, থিম , অভিনবত্বে ও বিশেষত্বে যে সেরার সেরা তা দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় ও আকর্ষণ দেখলেই বোঝা যায়। ১৯৩৪ সালে হাতিবাগান নবীন পল্লীর পূজোর সূত্রপাত হয়। সেই সময় অবশ্য থিম ছিলো না খুব সাদামাটা ভাবে ,স্বল্প বাজেটে পূজো হতো। তবে এখন হাতিবাগান নবীন পল্লী এর পূজো নিয়ে দর্শকদের বিশেষ আকর্ষণ ও উন্মাদনা থাকে।
নবীন পল্লীর পূজো এবার ৯০ বছরে পদার্পণ করলো। এবার তাদের পূজোর বিষয়ভাবনা সুকুমার রায় ও তার অনন্য সৃষ্টি আবোল তাবোল কে ঘিরে। সুকুমার রায়ের মৃত্যু শতবার্ষিকী ও আবোল তাবোল এর জন্ম শতবর্ষে কিংবদন্তি সাহিত্যিক কে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করতেই এই বিশেষ ভাবনা। সুকুমার রায় ছিলেন বহুমুখী প্রতিভাবান ব্যাক্তিত্ব। ভারতের ব্যঙ্গাত্মক ছড়ার প্রবর্তক ।
একাধারে তিনি নাট্যকার , শিশু সাহিত্যিক, রম্যরচনাকার ও সম্পাদক। তার সৃষ্টি আবোল তাবোল ও হ য ব র ল পড়েনি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। মৃত্যুর শতবর্ষ পরেও আজও বাঙালি মননে সুকুমার রায় ওতপ্রতভাবে জড়িয়ে আছে তাঁর সৃষ্টিকর্মের মধ্য দিয়ে। হাতিবাগান নবীন পল্লীর থিম এবারে অভিনবত্বে ও বৈচিত্র্যে যে বিশেষ চমক সৃষ্টি করতে চলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
যাহা আজগুবি , যাহা উদ্ভট, যাহা অসম্ভব
তাহাদের লইয়াই এই পুস্তকের পুজোর কারবার।
ইহা খেয়াল রসের বই পুজো ।
সুতরাং সে রস যাহার উপভোগ করতে পারেন না,
এ পুস্তক পুজো তাহাদের জন্য নহে ।