বিদিশা কর্মকার : কালিম্পংয়ের মাইরুং ফরেস্টের নাম শুনেছন আগে কখনো?নেওড়াভ্যালি ফরেস্ট লাগোয়া জায়গা এটি। এমনিতেই কালিম্পংয়ের অনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র। তার মধ্যে অন্যতম হলো এই মাইরুং গাঁও।
এতোটাই সুন্দর এখানকার পরিবেশ যে কল্পনা করা যায়না।নির্জন, নিরিবিলিতে রূপের ডালি নিয়ে বসে রয়েছে ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম।হোমস্টের ঘরে বসেই উপভোগ করা যায় কাঞ্জন জঙ্ঘা। হিমালয় পাইনের জঙ্গলের মাঝে পাহাড়ের সোঁদা গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।নেওড়া ভ্যালি ফরেস্ট লাগোয়া এমন একটি জায়গা রয়েছে সেটা অনেকেই জানেন না।
এর নীচেই রয়েছে তন্দ্রাবং। মাউরুং গাঁও ওরও উঁচুতে রয়েছে।মাত্র ৮ কিমি দূরেই আলগারা। আসার পথে চোখে পড়বে ফুটে আছে রোডোডেনড্রন। এখান থেকে আপনি আলগারা, ইচ্ছেগাঁও, রামধুরাতেও যেতে পারবেন।সব মিলিয়ে এখানে ৭১টি বাড়ি রয়েছে। আর জনসংখ্যা প্রায় ৪০০ জন। তার মাঝেই কাটিয়ে আসুন দুটো দিন।
এখান থেকে লাভা-লোলেগাঁও ভীষণ কাছে। মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে লাভা। কাজেই যদি ব্রেকফাস্ট করে বেরোন তাহলে লাভা ঘুরে এসে এখানে লাঞ্চ করতে পারেন। এতোটাই কাছে লাভা। তবে লাভার মতো ভিড় এখানে নেই। খুব বেশি হোমস্টে বা ফার্মস্টেও এখানে নেই। এখান থেকে ট্রেকিং রুটও রয়েছে। তবে বর্ষার সময় যাওয়া যায় না। জোঁকের কারণে পাহাড়ে বর্ষায় ট্রেকিং বন্ধ থাকে।
যাঁরা একটু অন্যরকম জায়গায় দিন কাটাতে চান তাঁদের জন্য সেরা জায়গা এটি।একদিকে পাহাড়ের সারি আর অন্যদিকে সবুজ জঙ্গল। হোমস্টের সামনেই ফুলের বাহার। রাস্তা ধরে যত এগোবেন দেখতে পাবেন চারদিকে নাম না জানা হরেক ফুলের মেলা। এর সঙ্গে মেঘ-রোদের লুকোচুরি। এককথায় সবুজে সবুজ, নীলিমায় নীল। এই পাহাড়ে একাধিক রকমের ওষধি গাছ রয়েছে। এমন গাছও রয়েছে যে গাছের পাতা রয়েছে যার গন্ধ শুকলে শ্বাস কষ্ট চলে যায়। এমনকী অ্যালার্জির অব্যর্থ ওষুধ। আবার এমন গাছ রয়েছে যে গাছের পাতা খেলে হজম হয়ে যায়। আবার হাত-পা কেটে গেলে সেই জায়গায় এমন কিছু গাছের পাতা রয়েছে যেটা অ্যান্টিসেপ্টিকের কাজ করে।কাজেই পাহাড় তো বটেই ভেষজ গাছপালাও এই গ্রামে রয়েছে অনেকে। পাহাড়ের আনাচে-কানাচে যে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য প্রাকৃতিক সম্পদ তা জানতে পারবেন। কেবল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়। একাধিক ভেষজ উদ্ভিদ সম্পর্কে জানা যাবে।এটিকে এখনও ভার্জিন অফবিট ডেস্টিনেশন হিসাবেই মনে করা হয়।
কিভাবে যাবেন?
এনজেপি অথবা বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে গাড়ি ভাড়া করে সোজা চলে যেতে পারেন মাইরুং গাঁও। না হলে কম পয়সায় বাসে চলে যান কালিম্পং। সেখান থেকে শেয়ার করে আপনার গন্তব্য স্থল মাইরুং গাঁও।